আরাভ সম্পর্কে সাকিবকে আগেই জানিয়েছিল পুলিশ, তবুও গিয়েছেন
পুলিশ খুনের মামলার আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতে করেছেন সোনার দোকান। সেই দোকান উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান, হিরো আলম, দীঘিসহ আরও অনেকেই। যেটা নিয়ে বইছে সমালোচনা।
ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ওই খুনের মামলার আসামি ‘আরাভ খান’ সম্পর্কে আগেই জানানো হয়েছিল তাদের। এর পরও সাকিবসহ অন্য সেলিব্রেটিরা সেখানে গিয়ে উদ্বোধনে অংশ নেওয়াটা দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেছেন ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘হত্যা মামলার আসামির দুবাইয়ে জুয়েলার্স উদ্বোধনের বিষয়ে গতকাল থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে। তার পরও সাকিব আল হাসান, হিরো আলম, দীঘিসহ যেসব সেলিব্রেটি উদ্বোধনে অংশ নিলেন তা দুঃখজনক।’ আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা মামুনকে শুধু হত্যাই করেনি তারা, তার লাশটাও যেন না পাওয়া যায় সে জন্য কালীগঞ্জে জঙ্গলে ফেলে এসেছে। আমরা এই হত্যা মামলার তদন্ত করে চার্জশিটও দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আসামি আরাভ খানকে কিভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া সাকিবদের অবগত করার পরও মার্ডার মামলার আসামি আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনে কেন গেল তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে তাদের দেশে ফেরার পর ডেকে জানতে চাওয়া হবে।’
আরাভ খানই রবিউল, ডিবি কখন বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন কোনো মামলার চার্জশিট প্রদান করা হয় তখন আসামিরা কে কোথায় আছেন, তা খোঁজ খবর নেওয়া হয়। আরাভ খানের বিভিন্ন ছবি প্রকাশ হয়। সাকিব আল হাসান টেলিভিশন ও ফেসবুকে ওই সোনার দোকান উদ্বোধনের বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলেন। সবকিছু মিলেই আমরা তথ্য পায় আরাভ খানই পুলিশ খুনের মামলার আসামি রবিউল ইসলাম।
২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন পরিদর্শক মামুন। তাকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ভারতে পালিয়ে যান। এই মামলায় ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশ রবিউলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। পুলিশ হত্যার মামলায় রবিউলের ভাড়া করা এক ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করে ৯ মাস জেল খেটে বের হন!
২০২০ সালে রবিউল ভারতীয় পাসপোর্ট পান। যাতে তার নাম বদলে লেখা হয় ‘আরাভ খান’। সেখান থেকে চলে যান দুবাই। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আরব আমিরাত সরকার তাকে রেসিডেন্ট পারমিট দেয়। রবিউল এখন সেখানেই আছেন, জুয়েলারি ব্যবসা করছেন। বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন করা হয়।