আরাভ খানকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহায়তা নেবে ডিবি
রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান আবারও আলোচনায় দুবাইয়ে “আরাভ জুয়েলার্স’ নামে একটি গয়নার দোকান উদ্বোধন করে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়িকা দিঘি এবং হিরো আলম সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, এই আরাভ খানের প্রকৃত নাম রবিউল ইসলাম। তিনি ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) পুলিশ ইন্সপেক্টর মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মামুন ইমরান খান। পরদিন তার মরদেহ গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান আবারও আলোচনায় দুবাইয়ে “আরাভ জুয়েলার্স” নামে একটি গয়নার দোকান উদ্বোধন করে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি হাজির করেছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সেলিব্রিটিদের, যে তালিকায় আছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়িকা দিঘি ও আলোচিত অভিনেতা হিরো আলমও।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, “রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে আরাভ খানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ। তিনি বিভিন্ন সময় নাম পরিবর্তন করে কখনো সোহাগ, কখনো শেখ হৃদয় নামে পরিচয় দিতেন। আমরা তাকে খুঁজছিলাম। তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে ডিবি। সেখানে আরাভকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনিই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।”
হারুন অর রশিদ বলেন, “ওই হত্যাকাণ্ডের পর রবিউল (আরাভ) পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে চলে যান, তাকে আমরা খুঁজে পাইনি। পরে আমরা দেখলাম রবিউল ইসলাম আপন নামের একজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারপর তাকে জেলখানায় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটা একটা ফেইক ঘটনা (আত্মসমর্পণ) ছিল। যে ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেছেন, তিনি আসলে ভুয়া। আসল আপনের সঙ্গে তার একটা যোগসূত্র বা কমিটমেন্ট হয়েছিল।”
জানা যায়, টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি রবিউলের পরিবর্তে জেলে যান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আবু ইউসুফ লিমন। যখনই তিনি জেলে গেলেন, প্রকৃত আসামি আপন তাকে আর টাকা দিচ্ছিল না। তখন তিনি আদালতে সত্য কথা বলে দেন যে, তিনি আপন নন, প্রকৃত আপন ভারতে আছেন। তিনি ভুল করেছেন বলেও আদালতকে জানান।
পরে আদালত আবারও ডিবিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, তখন আমরা তদন্ত করে দেখলাম যে আসলে এই আপন আসল আপন না। ওই আপন অবৈধভাবে ভারতে চলে গেছেন। বুধবার জানলাম দুবাইয়ে বড় স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। যে দোকানের লোগোতেই খরচ করা হয়েছে ৪১ কোটি টাকা।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার অভিযুক্তের দোকান উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ থেকে হিরো আলম ও সাকিব আল হাসানসহ অনেকে গেছেন, এটা দুঃখজনক। আমরা এর খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আমরা ইন্টারপোলকে আরাভ খানকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ করবো।”