বাবা যেন হাসতে হাসতে জান্নাতে যান: লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইসমাইলের ছেলে
দুর্ঘটনায় নিহত র্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা আজ বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বাহিনিটির সদর দপ্তরের শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় তার বড় ছেলে আনান হোসেন দেশবাসীর কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চান।
জানাজার আগ মুহূর্তে বাবার স্মৃতিচারণ করে অস্রুভেজা নয়নে আনান হোসেন বলেন, আমার বাবা হাসি-খুশি মানুষ ছিলেন। কোনো কারণ ছাড়া আমার বাবা কারো সঙ্গে রাগ করেনি। তিনি সবার সঙ্গে সব সময় হাসি-খুশিভাবে কথা বলতেন। কিন্তু বাবা আর আমাদের মাঝে নেই। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমার বাবা হাসি মুখেই যেন জান্নাতে প্রবেশ করেন। বাবার স্মৃতি স্মরণ করে আনান আরও বলেন, আমি যখন প্রতিদিন কোচিং শেষে বাসায় ফিরতাম তখন আশা করতাম বাবা-মা ডাইনিং টেবিলে বসে এক সঙ্গে খাবার খাবে বা টিভি রুমে বসে টিভি দেখবে। আমি বাসায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে বাবা যাই কিছু করতেন না কেন তা থামিয়ে আমাকে হাসি মুখে বলতেন ‘বাবা কেমন আছো।’
আনান বলেন, আমার বাবা খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন। তিনি যেভাবে হাসি মুখে সবার সঙ্গে কথা বলতেন, সেভাবেই যেন হাসি মুখে জান্নাতে প্রবেশ করেন। তিনি বলেন, অফিস থেকে ফেরার পর বাবা সব সময় আমার রুমে গিয়ে আমাকে খুঁজতেন। তখন আমাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে হাসি দিয়ে বলতেন কেমন আছো বাবা, তুমি দুপুরে খেয়েছ? আমার সঙ্গে বাবা কখনো কারণ ছাড়া রাগ করেনি। রাগ করলেও পরে বলতেন, ‘তোমার ভালোর জন্যই এমন করেছি, তুমি মনে কিছু কইরো না।’
এর আগে লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের ভগ্নিপতি ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হাসান বলেন, ইসমাইল ভাই আমাদের পরিবারের সবার প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। পরিবারের লোকজনের বিপদে সব সময় পাশে থাকতেন তিনি। তাকে হারানোর বেদনা সহ্য করার আমাদের জন্য খুব কষ্টের। ইসমাইল ভাইয়ের দুর্ঘটনা পরবর্তী র্যাব ডিজি ও উনার টিম যেভাবে আমাদের সাপোর্ট দিয়েছেন আমরা এইটা কখনোই ভুলতে পারব না। পুলিশের আইজিপিসহ সবার আন্তরিকতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা সহকারে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।