সমাজের তোয়াক্কা না করে স্ত্রীকে পিঠে নিয়ে ১৫ বছরের সংসার
ভালোবাসা অ’ন্ধ। ভালোবাসা মানে না কোনো যুক্তি, বিধি-নিষেধ। করে না হিসাব-নিকেশ, ভাবে না কোনো কিছু। তেমনই এক অজানা কন্ট’কাকীর্ণ ভবিষ্যৎ হাসিমুখে বেছে নিয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সোহেল মিয়া। পরিবার পরিজন, সমাজের তো’য়াক্কা না করে সবার অমতে পালিয়ে বিয়ে করেছেন ময়মনসিংহের ত্রিশালের রওশন আক্তারকে।
জন্ম থেকেই অচল দুই পা নিয়েই বেড়ে উঠা রওশনের। চলাচল ও কাজকর্ম করতে হয় হাতে ভর দিয়ে। এমন জীবন নিয়ে কারো জীবনসঙ্গী হওয়া ছিল অনেকটাই দুষ্প্রা’প্য। তবে সোহেল মিয়ার ভালোবাসা তাকে স্বপ্ন দেখিয়েছে নতুন করে বাঁ’চার। মোবাইলে হয়েছিল দু’জনের পরিচয় তারপর প্রেম। এরপর রওশনের ভালোবাসার টা’নে সব ছেড়ে সারা জীবনের সঙ্গী হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করা সোহেল।
এক সময় সোহেল ভালো চা’করি করতেন। সেই স্বচ্ছলতার জীবন ছেড়ে অ’ভাবের সংসার মেনে নিয়েছেন অসহায় স্ত্রীর পাশে থাকতে। নিজের পিঠে স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া-আসা করেন এখানে-সেখানে। ময়মনসিংহের ত্রিশালের গুজিয়াম এলাকায় মাটির ঘর আর একটি টং দোকানই সম্বল এ দম্প’তির। শত ক’ষ্টের মাঝেও তাদের ভালোবাসা আর পরস্পর আস্থা-বিশ্বাসেই সুখ খোঁজেন তারা।
সোহেল মিয়া বলেন, পড়াশোনা শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিস এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি করতাম। একদিন বিকেলে অফিস ছুটির সময় আমার টেবিলের ড্রয়ারে থাকা ১০ টাকার নোটে একটি নম্বর লেখা দেখতে পাই। ওই নম্বরে একদিন কল করি। সেই কলের মাধ্যমেই রওশনের সঙ্গে আমার প্রথম কথা হয়। ধীরে ধীরে প্রেমে জ’ড়িয়ে পড়ি। ২০০৭ সালের জানুয়ারি প্রেমের শুরুটা হলেও আমরা ডিসেম্বরে গিয়ে বিয়ে করি।
রওশন আক্তার বলেন, আমি প্রতিব’ন্ধী হওয়ায় আমার পরিবার থেকেও বিয়েতে সম্মতি ছিল না। সে সময় সবাই বলাবলি করেছিল, বিয়ের পর আমাকে ছে’ড়ে চলে যাবে। কিন্তু আমার আ’ত্মবিশ্বাস ছিল, আমি যাকে ভালোবাসব সেও আমাকে ভালোবাসবে। এই বিশ্বাসটাই আমি সোহেলের ওপর করতে পেরেছিলাম। সেজন্য সবার চোখ ফাঁ’কি দিয়ে তার হাত ধরে আমি পা’লিয়ে যাই এবং বিয়ে করি। মেয়ে সন্তান হওয়ার পর আমাদের ভালোবাসা যেন আরও বেড়ে গেছে।