খোলা আকাশের নিচে বাবার লাশ রেখে সম্পদ ভাগাভাগি
বাবার লাশ রেখে সম্পদ ভাগাভাগি এলাকার মানুষকে বিস্মিত করেছে। খোলা আকাশের নিচে ১০ ঘণ্টা রেখেও বাড়ি ও জমির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের সুরাহা করা যায়নি। বাবার রেখে যাওয়া সম্পদের ভাগ নিয়ে দুই ভাই ও চার বোনের বাদানুবাদ ও লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার একপর্যায়ে ছুটে আসেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
দীর্ঘ সালিশ বৈঠকে বিরোধ নিরসনের চূড়ান্ত পর্যায়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে গোয়েন্দা পুলিশ ও সাংবাদিকরা।
রোববার দুপুর ১২টার সময় উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের মাঝি বাড়িতে ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের বৃদ্ধ আদম আলীর স্ত্রী মালেকা বেগম শনিবার সকালে নিজ বাড়িতেই মারা যান। একই দিন দিবাগত রাত ৩টার সময় আদম আলীও (৯৫) মারা যান। তার ৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।
মারা যাওয়ার আগে আদম আলি তার ৪৮০ শতাংশ এবং তার স্ত্রীর ২৭ শতাংশ জমির পুরোটাই তাদের মেজ ছেলে মোহন মাঝিকে লিখে দেন। বিষয়টি তার বড় ও ছোট ছেলে এবং চার মেয়ে মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ৭ ভাই বোনের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
এ ঘটনায় দুই ভাই ও চার বোন এক হয়ে তাদের বঞ্চিত করার অভিযোগে দেওয়ানী আদালতে বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদম আলীকে নিয়ে মেজো ছেলে মোহন মাঝি এক সঙ্গে বসবাস করছিলেন। আদম আলির মৃত্যুর জন্য মোহন মাঝিকে দায়ী করে আসছিল বাকি ৬ ভাইবোন। তাদের অভিযোগ জেলা আদালতের মাধ্যমে জমিজমার সুষ্ঠু বণ্টনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় মোহন মাঝি পুরো জমি আত্মসাৎ করেন।
স্থানীয়রা জানান, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আদম আলির ৭ সন্তানের মধ্যে মেজো ছেলে মোহন মাঝির সঙ্গে বড় ও ছোট ভাই এবং চার বোনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলছিল। উভয়ের মধ্যে ৬টি মামলাও করা হয়েছিল। প্রায় দুই মাস আগে হায়দরগঞ্জ বাজারে চার শতাংশ জমি দখল করে ভবন ও দোকান নির্মাণে বাঁধায় কাউছার নামের ছেলেকে বেদম মারধর করা হয়। এ বিরোধের জেরে লাশ দাফন আটকে রাখা হয়।
এ বিষয়ে উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনা শোনার পরই আমি খোঁজখবর নেই। আদম আলী জীবিত অবস্থায় ৭ ছেলেমেয়েকে নিয়ে জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে কয়েকবার বৈঠকে বসছিলেন। কিন্তু মোহন মাঝি ছাড়া অন্য সন্তানরা কথা না শুনায় তাকে সব জমি লিখে দিয়েছেন আদম আলি।