মসজিদের চতুর্দিকে মৌচাক, ৩ বছরে কখনোই কামড় দেয়নি কোনো মুসল্লীকে
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের পূর্ব আমবাড়িয়া জামে মসজিদটিতে বসেছে মৌমাছির মেলা। গত ২০১৩ সালে কাতার চ্যারিটি ফান্ডে নির্মিত মসজিদটিতে ৩ বছর যাবত শীত মৌসুমে বসে অসংখ্য মৌচাক। তাছাড়া গত ৩ বছরে কখনোই কোনো মুসল্লীকে কামড় দেয়নি মসজিদের মৌমাছি। মৌচাক থেকে আহরিত মধু বিক্রির টাকা ব্যয় করা হয় মসজিদের উন্নয়ন কাজে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা যায়, মসজিদের সম্মুখ ভাগের প্রবেশ পথের উপরের দিকে একই লাইনে অসংখ্য মৌচাক। এরই মাঝে মুসল্লীসহ সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। প্রায় তিন বছর যাবত নিয়মিত মৌচাক বসে মসজিদটিতে। প্রথম বছর কম ছিল, কিন্তু পরের দু-বছর অনেকগুলো মৌচাক মসজিদে ও গাছে বসেছে। মসজিদের চতুর্দিকে এমন মৌচাক দেখতে অনেক মানুষ আসেন বলে জানান তারা। এখন এলাকাতে মসজিদটি ‘মৌমাছি মসজিদ’ বলে পরিচিতি লাভ করেছে।
এ বিষয়ে মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. মসলেম মন্ডল বলেন, ৩ বছরের বেশি সময় ধরে শীতের মৌসুমে মসজিদের বারান্দায় মৌমাছির চাক বসে। প্রথমদিকে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা লোকজন ও মসজিদের সামনের পথ দিয়ে চলাচল করা লোকজন খুবই আতঙ্কে থাকত। এখন আর কেউ আতঙ্কিত হয় না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ও মসজিদের সামনের পথ দিয়ে চলাচল করতে করতে আমাদের কাছে এখন বিষয়টি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, তাছাড়া আজ অব্দি কোনো ব্যক্তিই মৌমাছির দ্বারা কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। বরং মসজিদের বারান্দায় মৌমাছির চাক বসায় আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। যখন মৌমাছির চাক ভাঙ্গা হয় তখন মধু বিক্রির টাকা মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যয় হয়। এছাড়াও সকালে মসজিদের বারান্দায় ছোট ছোট বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া হয়। এদের মধ্যেও কেউই এখনো মৌমাছির দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। মসজিদের বারান্দায় মৌমাছির চাক বসায় আমরা এলাকাবাসী অনেক খুশি।
এ সময় মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু বক্কর মন্ডল জানান, মৌমাছিগুলো শীতের শুরুতে বাসা বাঁধে। জ্যেষ্ঠ মাসের শেষের দিকে চলে যায়। বছরের বাকি সময় মৌচাক থাকে না। মৌসুমের শুরুতে এসে আবারও মৌচাক তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, মৌমাছি কাউকেই কামড় দেয় না। মৌচাকের চারপাশে দেয়াল থেকে ময়লা পরিষ্কার করতেও সমস্যা হয় না। মৌমাছিদের আঘাত করলে ওরা আক্রমণ করে। কিন্তু আমাদের মসজিদে আঘাত করা দূরের কথা সবাই মৌচাকগুলোকে দেখভাল করে রাখে।